রামেকে বৃষ্টির পানিতে বহির্বিভাগে জলাবদ্ধতা ও প্রধান ফটকে হাঁটুপানি, ভোগান্তিতে রোগী- স্বজনরা
আপডেট সময় :
২০২৫-০৭-১৫ ২১:০৮:০৬
রামেকে বৃষ্টির পানিতে বহির্বিভাগে জলাবদ্ধতা ও প্রধান ফটকে হাঁটুপানি, ভোগান্তিতে রোগী- স্বজনরা
মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: ২৪ ঘণ্টার বৃষ্টিতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের বহির্বিভাগে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে এবং হাসপাতালের প্রধান ফটক ও জরুরি বিভাগে পানি জমেছে। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দুপুর ২টায় রামেকে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।
এসময় চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। সরেজমিনে দেখা গেছে, সোমবার থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত চলে। কয়েক দফার বৃষ্টির পানিতে হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে এবং গেটের আশপাশে প্রায় হাঁটুপানি জমেছে। এতে অনেকেই হুইল চেয়ার ও স্ট্রেচারে থাকা রোগীদের বৃষ্টির মধ্যে পানি ঠেলে বহির্বিভাগে প্রবেশ করতে দেখা যায়।
বানিশ্বর থেকে আসা রোগীর স্বজন অজিফা বেগম জানান, সকাল থেকে অপেক্ষা করে দুপুরের দিকে সিরিয়াল পাই। কিন্তু হাসপাতালের পুরো চত্বর পানিতে তলিয়ে যায়। একদিকে রোগীকে নিয়ে দুশ্চিন্তা, তার ওপর পানি ও কাদার মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে। এ সময় অনেক নারী ও শিশুদের ভিজে হাসপাতালের ভেতরে ঢুকছে দেখা যায়। অনেকে আবার জুতা খুলে কাদা পানি মধ্যে দিয়েই প্রবেশ করতে দেখা যায়।
স্থানীয় দোকানী মোঃ শামীম বলেন, পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই এমন পরিস্থিতি হয়। ফলে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তার স্বজনদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। রাজশাহী নগরীর কাজলা এলাকার তুরজিম তানজিম বলেন, দুপুরে বাচ্চা নিয়ে ডাক্তার দেখাতে এসেছি। এখান আবার বের হয়ে দেখি পানি ড্রেন দিয়ে নামেনি। দ্রুত পানি নামানোর ব্যবস্থা না থাকায় তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেউ দায়ি করেন।
তিনি আরও বলেন, বর্ষা শুরু হলেই রোগী ও স্বজনদের এই ভোগান্তি পোহাতে হবে এটা কি ধরণের কথা। ড্রেনেজ ব্যবস্থা ঠিক থাকলে জলাবদ্ধতা হবে কেন? আর জলাবদ্ধতা হলেও ব্যবস্থা নেয়া হয়না কেন? বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য রাকে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ ব্যপারে জানতে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহম্মেদের ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। ফলে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এদিকে, গত ২৪ ঘন্টার বৃষ্টির ফলে রাজশাহী নগরীর সাহেব বাজার, উপশহর, নিউ মার্কেট, বিসিক শিল্প এলাকাসহ বেশ কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
নগরীর সাহেব বাজারের শাড়ী ব্যবসায়ী সাহেব আলী বলেন, প্রতিবছরই সামান্য বৃষ্টি হলেই রাজশাহীর প্রাধান এই সড়কগুলি ডুবে যায়। তবে কোনো স্থায়ী সমাধান দেখা যায়না। বর্ষা এলেই জণগনের ভোগান্তি পোহাতে হয়।
সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ মোঃ মামুন ডলার বলেন, রাজশাহী শহরে যেটাকে জলাবদ্ধতা বলে আসলে সেটি জলাবদ্ধতা নয়। ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টার মধ্যেই সব পানি নেমে যায়। মূলত কনস্ট্রাকশনের কাজের কারণে এটি হয়। বৃষ্টি হলে আমাদের লোকজন মাঠে নেমে যায়। রাজশাহী মেডিকেল কলেজের সামনে যেটি হয়েছে, এখানে ভ্যানে বিভিন্ন পণ্য বেচাকেনা হয়। তারা ড্রেন বন্ধ করে দেয়। এ কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। সেটাও থাকবে না। আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সচেতন হলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে না।
এদিকে রাজশাহী আবহাওয়া অফিস বলছে, আগামী দুই থেকে তিন দিন ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে রাজশাহীতে। আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, রাজশাহীতে গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৯০ মিলিমিটার। আগামী আরও দুই একদিন বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin
কমেন্ট বক্স